কাঠের ঘানিতে ভাঙ্গানো সরিষার তেল
আপনি নিশ্চয়ই আপনার পরিবারের স্বাস্থ্য সুরক্ষাকে সবচেয়ে বেশি প্রধান্য দেন। সুস্বাস্থ্যের জন্য দরকার পুষ্টিকর, সুষম খাবার। আমরা সাধারণত রান্না করা খাবারই বেশি খেয়ে থাকি। বেশিরভাগ রান্নায় সবচেয়ে বেশি যে উপদানটি ব্যবহার করা হয় তা হল তেল, মসলা। রান্নর স্বাদ ও পুষ্টি কথা বিবেচনায় তেল খুবই গুরুত্বর্পূন।
আপনি সচেতন ব্যাক্তি হিসেবে, বাজেট বিবেচনায় নিশ্চয়ই সরিষার তেলকে পছন্দ করে থাকবেন। সরিষার তেল কোনটি ভালো ? কাঠের ঘানিতে ভাঙ্গানো সরিষার তেল নাকি মেশিনে ভাঙ্গানো সরিষার তেল।
কাঠের ঘানি ভাঙা তেল ও ইলেকট্রিক কলে ভাঙা তেলের ভেতর কি পার্থক্য রয়েছে?
আমরা সবাই জানি যে খাঁটি সরিষার তেলের ঝাঁজ খুব কড়া হয়। আদতে ঘটনা ভিন্ন। একেবারে খাঁটি দেশীয় সরিষা, কাঠের ঘানিতে ভাঙা হলে, সেই তেলের ঝাঁজ হয় খুবই কম। কিন্তু সুঘ্রাণ হয় তীব্র । যেখানে ইলেকট্রিক কলে পিষ্ট হয়ে ও অনেকটা পুড়ে যে সরিষার তেল পাওয়া যায়, তার সুঘ্রাণ তীব্র না থাকলেও, ঝাঁজ থাকে অনেক বেশি। কারণ, তেল তৈরির প্রক্রিয়ায় সরিষা পুড়ে তেল তৈরি হয়।
সরিষার তেলের পুষ্টিগুণ: (উইকিপিডিয়া এর তথ্য মতে);
Ø সরিষার তেল উদ্দীপক হিসেবে পরিচিত। অন্ত্রে পাচকরস উৎপাদনে সাহায্য করায় হজমপ্রক্রিয়া দ্রুত হয়। এ ছাড়া একই প্রক্রিয়ায় ক্ষুধা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
Ø বিভিন্ন ভোজ্য তেলের ওপর করা একটি তুলনামূলক সমীক্ষায় দেখা যায়, সর্ষের তেল ৭০ শতাংশ হৃৎপিণ্ড–সংক্রান্ত রোগের ঝুঁকি কমায়।
Ø সর্ষের তেল ব্যবহারে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস পায়, যা হৃদ্রোগের আশঙ্কা কমিয়ে দেয়। Ø সর্ষের তেলে গ্লুকোসিনোলেট নামক উপাদান থাকে, যা অ্যান্টিকারসিনোজেনিক উপাদান হিসেবে পরিচিত। তাই এটি ক্যানসারজনিত টিউমারের গঠন প্রতিরোধে সাহায্য করে। এর ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট কোলোরেক্টাল ও গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টাইনাল ক্যানসার থেকে সুরক্ষাও প্রদান করে।
Ø সর্ষের তেল চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। অকালে চুল সাদা হওয়া রোধ করে ও চুল পড়া কমায়। সর্ষের তেলে প্রচুর ভিটামিন ও খনিজ থাকে। বিশেষ করে উচ্চমাত্রার বিটা ক্যারোটিন থাকে এতে। বিটা ক্যারোটিন ভিটামিন-এতে রূপান্তরিত হয়ে চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এ ছাড়া এতে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফ্যাটি অ্যাসিড ও ম্যাগনেশিয়াম থাকে, যা চুলের বৃদ্ধিতে অনেক সাহায্য করে। এছাড়াও নবজাতকের কোমল শরীরে মালিশের জন্য বেশ জনপ্রিয় সরিষার তেল।